অবৈধ ও নকল সিগারেটে সরকার হারাচ্ছে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব
নিজস্ব প্রতিবেদক:অবৈধ ও চোরাই পথে দেশে আসা সিগারেটের কারণে সরকার প্রতিবছর হারাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব। এসব সিগারেটের বেশিরভাগই কর ফাঁকি দিয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে, ফলে বৈধ তামাক কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সরকারি কোষাগারে রাজস্ব প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, দেশে অবৈধ তামাকজাত পণ্যের বাজার ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি সিগারেট অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করছে। এসব পণ্য শুল্ক ও ভ্যাট ছাড়া বিক্রি হওয়ায় দাম তুলনামূলক কম থাকছে, যা নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠী ও তরুণদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বাড়িয়ে তুলছে।
সরকারি সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে এসব অবৈধ তামাকজাত পণ্যের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে। কাস্টমস, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যৌথ অভিযানে নিয়মিতভাবে অবৈধ সিগারেট জব্দ করা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়ানো এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করা জরুরি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, অবৈধ সিগারেটের সহজলভ্যতা শুধু রাজস্ব ক্ষতির কারণ নয়, বরং জনস্বাস্থ্যের জন্যও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম দামের কারণে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ধূমপান শুরু করার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যখাতে আরও বড় ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করছে।
এছাড়া বাজারে নকল ও নিম্নমানের সিগারেট বিক্রির ফলে ভোক্তারা আরও বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ছেন। এসব সিগারেটের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো মান নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এতে ক্ষতিকর রাসায়নিকের পরিমাণ বেশি থাকে, যা ক্যান্সার ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি, কর ফাঁকির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং অবৈধ পণ্যের সরবরাহ চেইন ভেঙে ফেলার উদ্যোগ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।
এই খাতের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অবৈধ তামাক বাণিজ্য অব্যাহত থাকলে সরকারের ঘোষিত “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ ২০৪০” গড়ার লক্ষ্যে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হবে।