রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

চাকসু নির্বাচন: ১৫ কেন্দ্রের ৭০০ বুথে ভোট দেবেন শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। আগামী ১৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে স্থাপিত প্রায় ৭০০ বুথে একযোগে ভোট দেবেন শিক্ষার্থীরা।

ভোটের দিন ঘনিয়ে আসতেই ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। দীর্ঘ বিরতির পর এই নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীরা যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনি প্রশাসনও পুরো প্রক্রিয়াটি নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি পদে ভোটগ্রহণ হবে। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৬টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর ১৪টি হলে প্রার্থী হচ্ছেন আরও ৪৯৩ জন। প্রার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় প্রতিটি ভোটারের হাতে থাকবে ৫-৬টি ব্যালট পেপার, এবং একজন শিক্ষার্থীকে ভোট দিতে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৮ জন।

ভোটগ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ অনুষদের ভবনে ১৫ টি কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি আবাসিক হলে ও একটি হোস্টেলের নামে নামকরণ করা হবে। প্রতিটি ভবনে কক্ষের আকার অনুযায়ী ৬০ থেকে ৬৫টি ভোটকক্ষ থাকবে।

নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভোটকক্ষ ছাড়া বাকি সব জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে থাকবে বড় এলইডি স্ক্রিন, যেখানে সরাসরি ভোট পরিস্থিতি দেখা যাবে। প্রয়োজনে কমিশন সিসিটিভি ফুটেজ সরাসরি সম্প্রচারও করতে পারবে।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ডাকসুর অভিজ্ঞতা অনুসরণ করে এবার প্রতিটি ব্যালট পেপারের জন্য আলাদা ব্যালট বাক্স থাকবে। কিছু বাক্স স্বচ্ছ ও কিছু ঘোলাটে রাখা হবে, যাতে ভোটের গোপনীয়তা ও স্বচ্ছতা বজায় থাকে। ব্যালট পেপার ছাপানো হবে সর্বোচ্চ গোপনীয়তায়, নির্বাচন কমিশনের উপস্থিতিতে।

প্রতিটি অনুষদের ডিন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং বিভাগের সভাপতিরা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটার তালিকায় শিক্ষার্থীদের ছবি সংযুক্ত থাকবে, যাতে জাল ভোটের সুযোগ না থাকে।

চাকসু নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে পাঁচটি অনুষদ ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যালট পেপারের সংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যালট বাক্সের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। প্রার্থী ও ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর সোমবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, “দীর্ঘ সময় পর হতে যাওয়া এই নির্বাচনকে আমরা সম্পূর্ণ বিতর্কমুক্ত রাখতে চাই। ব্যালট ছাপানো থেকে ভোটকক্ষ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপই কমিশনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হবে।”

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের পথ খুলে দেবে। তারা আশা করছেন, নির্বাচনের পর আবাসন সংকট, যাতায়াত, খাবারের মান ও সেশনজটের মতো দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলোর সমাধানে চাকসুতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কার্যকর ভূমিকা রাখবেন।

আরো