মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ

মিরপুরে আগুন: নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনদের আহাজারি

রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় প্রিন্টিং কারখানা এবং কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগার ঘটনায় ৯ জন নিহতের তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তবে এখনো অনেকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল ও আশপাশের হাসপাতালগুলোতে নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে ফিরছেন অসংখ্য মানুষ। অনেকে প্রিয়জনের ছবি হাতে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

তাদের একজন সুরমা বেগম। তিনি জানান, তার মেয়ে নার্গিস আক্তারের কোনো খবর পাচ্ছেন না। মেয়ের ছবি হাতে আহাজারি করে বলছেন, ‘আর্মি, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস কেউ কিছু বলতাছে না। ভেতরে কী অবস্থা, মাইয়াডার কিছু হইল কি না, কিছুই জানি না।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, পোশাক কারখানার ভেতরে ঢুকতে পারলেও এখনো রাসায়নিকের গুদামে প্রবেশ করা যায়নি। এই অবস্থায় হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভানোর কাজ করছেন।

আর আশপাশে প্রায় কয়েক হাজার উৎসুক জনতা ভিড়। কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের স্বজনেরা ছবি নিয়ে আহাজারি করছেন। স্বজনদের খোঁজে পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে অগ্নিদুর্ঘটনাকবলিত স্থান।
ভাগনি মাহিরাকে (১৪) খুঁজতে এসেছেন মামা মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার ভাগনি গার্মেন্টসের তিন তলায় কাজ করত।

আগুন লাগার পর থেকে তাকে খুঁজছি, কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না। আশপাশের হাসপাতালে গিয়েছি, ফায়ার সার্ভিসে খোঁজ নিয়েছি—তারা শুধু ধৈর্য ধরতে বলেছে।
আরেক স্বজন লাইজু বেগম জানান, তার বোন নারগিস আক্তার সকালে কাজে গিয়েছিলেন, এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ নেই। সকাল ১১টার দিকে খবর পাই আগুন লেগেছে। সেখানকার একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানতে পারি, কেউ বের হতে পারেনি। তারপর থেকে আর কোনো খবর পাইনি।

‎ভাগনি সুলতানা ও তার স্বামীর ছবি হাতে ইয়াসিন নামের আরো একজন বলেন, ‘আমার ভাগনি ও ভাগনির জামাই তিন দিন আগে কাজে ঢুকেছে। আজ সকালে দুজন একসঙ্গে কাজে আসে। আগুন লাগার পর ফোন দিয়ে জানায়, তারা ভেতরে আটকে গেছে। এর পর থেকে আর কোনো খোঁজ নেই।’

‎স্বজনদের অনেকে আবার ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। স্বজনেরা জানান, সকাল থেকে তারা আগুন নেভানো ও উদ্ধারকাজ করছেন। এখনো আগুন নেভাতে পারেনি। কাউকে উদ্ধারও করতে পারেনি। ভেতরে কী অবস্থা, তা-ও স্বজনেরা জানেন না।

‎ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। অগ্নিনির্বাপণ শেষে ভেতরের পরিস্থিতি জানা যাবে।

আরো